Monday, July 21, 2008

আমি কে ?

আল্লাহর সৃষ্টি জগতের কোন পদার্থই মানুষের কাছে তার দেহ অপেক্ষা অধিকতর নিকটবর্তী নয়। মানুষ তার নিজ দেহ ও আত্মা নিয়ে গবেষনা করলে জ্ঞান বিজ্ঞানের আলোর জগতে প্রবেশ করতে পারে। নিজেকে জানার অর্থ হচ্ছে দেহ ও আত্মাকে জানা। মহান স্রষ্টা, হযরত আদম (আঃ) কে তাঁর নিজের পচন্দ মতো করে সৃষ্টি করেছেন। তাই আদম সন্তান নিজেকে চিনে নিতে পারলেই, আল্লাহর পরিচয় লাভ করতে পারবে। আল্লাহ পাকের সৌন্দর্য ও তাঁর তত্ত্বজ্ঞান লাভে ধন্য হবে। নিজেকে জানা মানেই, স্রষ্টাকে-তাঁর সৃষ্টিকে জানা। সুস্থ পীড়ামুক্ত আত্মার অধিকারী হওয়া। আল্লাহ বলেন, যে সুস্থ অন্তর নিয়ে আল্লাহর কাছে আসবে। জান্নাতে আল্লাহ ভীরুদের নিকটবর্তী করা হবে। (সুরা শোআরা ৮৯-৯০)সুরা হামিম আস সাজদায় উল্লেখ রয়েছে,'ওদের কর্ণচক্ষু ও ত্বক ওদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে সাক্ষ্য দেবে ওদেরই বিরুদ্ধে।' তাই 'আমি'র রহস্যভেদ করা বড়ই কঠিন। আমার ত্বক,চোখ,কান,অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই আমার নয়, তাহলে আমি কে? নিজ অস্তিত্ব ও ব্যক্তিত্বের গরুত্ব জানতে পারলেই খোদার অপার মহিমা ও অসীম ক্ষমতার সন্ধান লাভ করা যাবে। তখন জানা যাবে প্রতিটি মানব সন্তানই স্বভাবধর্ম ইসলামের যোগ্যতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, পরে পিতামাতার মত গ্রহণ করে বিভ্রান্ত হয়।মহাবিস্ফোরণের পর, আকাশমন্ডলী,পৃথিবী, গ্রহ-নক্ষত্রমন্ডলী,গ্যালাক্সিগুলো, সব প্রাণের বিভিন্ন রূপ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ সব কিছুকে অস্তিত্ব ধারণ করে তাদের সবাইকে স্বীয় ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করার নির্দেশ প্রদান করেছিলেন, তখন সবাই তাঁর অনুগত হয়ে এসেছিল।'আমরা এলাম অনুগত হয়ে।' (সুরা হামিম আস সাজদাহ-১১)। মানুষের মধ্যে অনেকে কোন শক্তি বলে আল্লাহকে অস্বীকার করে! নাস্তিক হয়! তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে সঙ্কোচ বোধ করে। বড় বড় বুদ্ধিজীবী,জ্ঞানী,বিজ্ঞানী বলে নিজেকে দাবি করে কিন্তু মহাবিজ্ঞানীর বিজ্ঞান গ্রন্থ আল কুরআন বুঝে না, মহাবিজ্ঞানীর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি আপন দেহ ও আত্মার গভীরে প্রবেশ করে না। মানবদেহে ও আত্মায় রয়েছে স্রষ্টার ক্ষমতার নিদর্শণ। যারা স্রষ্টার অস্তিত্ব খুজেন, তাদের কে বলবো আপনি আপনাকে দেখুন, আপনাকে নিয়ে ভাবুন, স্রষ্টার অস্তিত্ব পেয়ে যাবেন।মানব আত্মা হচ্ছে 'আল্লাহর হকুম'। মহান আল্লাহ মানব আত্মাকে ধারণাতীত ও নিরাকার রূপে সৃষ্টি করে সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ওপর আধিপত্য ও প্রভুত্ব প্রদান করেছেন এবং সতর্ক করে বলেছেন, 'সাবধান, নিজ অস্তিত্ব ও নিজের বাদশাহি সম্পর্কে অসতর্ক থেকো না । যদি ভুলো, তবে তোমার সৃষ্টিকর্তাকে ভুলবে।'সুরা জারিয়াতে আল্লাহ তায়ালা জোরালোভাবে ঘোষনা দিয়েছেন,'আমি জ্বিন ও মানবজাতিকে শুধু আমার দাসত্ব করার উদ্দেশ্যই সৃষ্টি করেছি। তা ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয়।' আর মানুষের সুবিধার্থে ও কল্যাণে আসমান,জমিন এবং এর মধ্যস্থিত সব কিছুই মানুষের অধীন করে দিয়েছেন। ' আসমান ও জমিনের মধ্যস্থিত সব কিছুই আল্লাহ তায়ালা তোমাদের (মানুষের) অধীন করেছেন।'( সুরা জাছিয়া)দয়াময় আল্লাহর অফুরন্ত নিয়ামতের জন্য মানুষকে তাঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ হতে হবে। তার নিমক হারামি করা যাবে না । দুনিয়াতে মানুষের চাওয়া - পাওয়ার শেষ নেই। সুখ-শান্তির ঠিকানা বিজ্ঞানীরাও খুঁজে পাননি। সুখ-শান্তির রহস্য আবিষ্কারের একমাত্র পথ নিজেকে জানা। নিজেকে জানার মাধ্যমেই সব রহস্যের দুয়ার খুলে যাবে। আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের স্মরণে মনের জমিনে সুখের ঠিকানা গড়া সম্ভব হবে। "যে নিজেকে চিনেছে সে তার প্রভুকে চিনতে পেরেছে।" যে পৃথিবীর সবকিছুই পেল কিন্তু আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে পেল না, সে কি সুখী? সে তো কিছুই পেল না! হে আল্লাহ, আমাদের কুরআন ও হাদিসের মর্মবাণী উপলব্ধি করে সরল সঠিক পথে চলার জ্ঞান দাও। যাতে করে নিজেকে জানার মাধ্যমে স্রষ্টাকে ও তাঁর সৃষ্টিকে জানতে পারি। নবী (সাঃ) এর আদর্শের অনুসারী হতে পারি।

5 comments:

নিঝুম said...

blogspot এ স্বাগতম নুর3ডিইডি ভাই :D

binirman said...
This comment has been removed by the author.
ত্রিভুজ said...

আপনাকে এখানে পেয়ে ভাল লাগলো নুর ভাই। নিয়মিত লিখুন.. (শাওনের ভাষায়, হাত খুলে লিখে যান).. ;)

আশরাফ রহমান said...

স্বাগতম আনোয়ার ভাই। আপনি তাহলে কথা রাখলেন।

Anowar3ded said...

বিবেক সত্যি ভাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনার সাহায্যের কারণেই আজকে আমি ব্লগস্পর্টে লিখতে পারতেছি।

ত্রিভুজ ভাই আসলে সবাইকে এখানে দেখে আমারো খুব ভালো লাগছে। আমার হাত খোলাই আছে তবে লিখতে পারছিনা।

আশরাফ ভাই কথাতো রাখতেই হবে, যে খানে আমার প্রিয় ভাইয়েরা কথা বলেছেন।

আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।